মোঃ ইনামুল হাসান মাসুম : কৃষ্ণচূড়া লাল হয়েছে ফুলে ফুলে, তুমি আসবে বলে’ এখন সময় কৃষ্ণচূড়ার বাহারি রঙয়ে মাতোয়ারা হবার। এই গ্রীষ্মের কড়া রোদে কৃষ্ণচূড়ার আবীর নিয়ে প্রকৃতি সেজে উঠেছে বর্ণিল রূপে। দেখলেই মনে হয় প্রকৃতিতে কৃষ্ণচূড়ার রঙে আগুন জ্বলছে। যে দিকে চোখ যায় যেন সবুজের মাঝে লালের মূর্ছনা, প্রকৃতির এই অপরূপ সাজ দেখে দু’চোখ জুড়িয়ে যায়।

এমনটিই ফরিদপুর সদর উপজেলার প্রতিটি রাস্তা ঘাট ও গ্রামের আনাচে কানাচে রক্তিম লাল হলুদ রঙের কৃষ্ণচূড়া ফুলে ছেয়ে গেছে। বৈশাখ এলেই যেনো প্রকৃতির ভালোবাসার কথা জানান দিতে লাল লাল হয়ে হেসে উঠে কৃষ্ণচূড়া ফুল। চোখ ধাঁধানো কৃষ্ণচূড়া ফুলের সৌন্দর্য যেন হার মানায় ঋতুরাজকেও। ঋতুচক্রের আবর্তনে কৃষ্ণচূড়া তার মোহনীয় সৌন্দর্য নিয়ে আবারো হাজির হয়েছে প্রকৃতির মাঝে। কৃষ্ণচূড়ার লাল আবীর গ্রীষ্মকে দিয়েছে এক অন্য মাত্রা।

সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার লিটন ঢালী এর সরকারি কার্যালয়ে ইউপি চেয়ারম্যানদের উপস্থিতিতে একান্ত আলাপচারিতায় হঠাৎ দৃষ্টিপাত হয় প্রকৃতির এই অপরূপ সাজ কৃষ্ণচূড়ার লাল আভা, দেখে দু’চোখ জুড়িয়ে যায় এবং এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও মুগ্ধতা নিয়ে সকলের সাথে চলে বেশ কথপকথন।

সেই ধারাবাহিকতায় উপজেলার মধ্যে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বৈশাখে কৃষ্ণচূড়া তার লাল আবীর নিয়ে পুকুর পাড় সহ প্রাচীর ঘেঁষে মাথা উঁচু করে রঙিন সাজে দাঁড়িয়ে আছে। দেখে মনে হচ্ছে ঋতুরাজ বসন্তের ভালোবাসা নিয়ে কৃষ্ণচূড়া তার সমস্ত রঙ প্রকৃতির মাঝে ছড়িয়ে দিয়েছে। এই কৃষ্ণচূড়া গাছের দিকে তাকালেই তার মুগ্ধতায় যে কারো দৃষ্টি কেড়ে নেয়।

স্থানীয়রা জানান, এই কৃষ্ণচূড়া ফুল লাল ও হলুদ রঙের হয়ে থাকে। আমরা না জেনে একে কৃষ্ণচূড়া বলে থাকি। লাল রঙয়ের ফুলকে কৃষ্ণচূড়া ও হলুদ রঙের ফুলকে রাধাচূড়া বলা হয়। তবে হলুদ রঙে রাধাচূড়া এখন তেমন দেখা যায় না বলেই চলে। আমাদের দেশে এপ্রিল মে মাসে এই ফুল ফোটে।

বছরের অন্যান্য সময় এই ফুল বা গাছ সচরাচর চোখে না পড়লেও এপ্রিল মে মাসে যখনি গাছে নতুন পাতা বা ফুল ফোটা শুরু করে তখনি যেন পথচারীর নজর কাড়ে মনোমুগ্ধকর এই কৃষ্ণচূড়া।

স্বেচ্ছাসেবী ইকবাল মাহমুদ ইমন জানান, যেদিকে তাকাই শুধু চোখে পড়ছে কৃষ্ণচূড়া ফুলের লাল আভা। প্রকৃতি যেন ফিরে পেয়েছে নতুন রূপ।

কানাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফকির মোঃ বেলায়েত হোসেন জানান, পলাশ-শিমুল যদি বসন্তের প্রতীক হয়, কদম যদি হয় বর্ষার, তবে কৃষ্ণচূড়া নিশ্চয়ই গ্রীষ্মের প্রতীক। গ্রীষ্মের তপ্ত দিনেই ফোটে এটি। কৃষ্ণচূড়ার ডালে ডালে এখন আগুন লেগেছে। সবুজ পাতার ফাঁকে মোরগের লাল ঝুঁটির মতো ফুটেছে ফুল। অন্য বছরের তুলনায় এবছর কৃষ্ণচূড়া ফুল অনেক বেশি ফুটেছে। আমরা এর সৌন্দর্য ধরে রাখতে মাঝে মাঝে ক্যামেরা বন্দী করে থাকি।

ফরিদপুরে প্রতিটা গ্রামে গ্রামে এখন কৃষ্ণচূড়ার শাখায় শাখায় রক্তিম লাল ফুলের সমারোহ। কৃষ্ণচূড়া গাছ খুব একটা বড় হয় না। তবে এর ডাল পালা পাইকর গাছের মতো অনেক জায়গা পর্যন্ত বিস্তৃত থাকে। কৃষ্ণচূড়া গাছ বর্তমানে রাস্তার দুই ধারে এবং বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি হাসপাতাল ও উপজেলা পরিষদের আঙিনায় শোভা পাচ্ছে। কৃষ্ণচূড়া ফুলের পাপড়ি লাল-হলুদ রঙয়ের হয় এর ভেতরে অংশে হালকা হলুদ রঙ যুক্ত অনেক দূর থেকে দেখতে মনে হয় গাছে গাছে যেন লাল আগুন জ্বলছে।